সফটওয়্যার ও প্রোগ্রামের সমষ্টি যা হার্ডওয়্যার ও ব্যবহারকারীর সাথে সম্পর্ক সৃষ্টি করে কে হার্ডওয়্যাকে কার্যকরী করে তোলে । হার্ডওয়্যার হচ্ছে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যা সফটওয়্যার এর প্রাণ। সফটওয়্যার ছাড়া অর্থহীন। হার্ডওয়ার দেখা যায়, কাজ করা যায় কিন্তু সফটওয়্যার দেখা যায় না। সফটওয়্যার কম্পিউটার পরিচালন করে থাকে। সুতরাং কম্পিউটারের যে অংশ দেখা যায় না, স্পর্শ করা যায় না অথচ কাজ করা যায় তাকে কম্পিউটার সফটওয়্যার বলে। কম্পিউটারের মাধ্যমে কোন কিছু করতে হলে তা অবশ্যই তাকে সঠিক ও ধারাবাহিক নির্দেশ প্রদান করতে হয়। ধারাবাহিক এই নির্দেশনাকেই প্রোগ্রাম বলে। সঠিক ও নির্ভুল ফলাফল পেতে হলে প্রোগ্রামকে অবশ্যই নির্ভুল হতে হবে। সফটওয়্যার বা প্রোগ্রাম যত সুক্ষ বা দক্ষ হবে কম্পিউটারের কাজের গতি তত বৃদ্ধি পাবে। এজন্য সফটওয়্যারকে হার্ডওয়ার্কের প্রাণ বলা হয়।
সফটওয়্যার প্রধানত দুই প্রকার :-
১) সিস্টেম সফটওয়্যার (system software)
২) অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার ( Application software)
১) সিস্টেম সফটওয়্যার (system software) :-
যে সফটওয়্যার কম্পিউটারের হার্ডওয়ার কে কার্য উপযোগী করে তোলে তাকে সিস্টেম সফটওয়্যার বলে। হার্ডওয়্যার ও ব্যবহারিক সফটওয়্যার এর মধ্যে সেতুবন্ধন স্থাপন করে সিস্টেম সফটওয়্যার। বিভিন্ন ধরনের সিস্টেম সফটওয়্যার আছে তন্মদ্ধে অপারেটিং সিস্টেম হচ্ছে সিস্টেম সফটওয়্যার এর একটি উদ্দেশ্য।
২) অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার ( Application software) :-
যে সফটওয়্যার ব্যবহারিক কাজের নিমিতে বাণিজ্যিকভাবে তাকে অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার। ব্যবহারিক কাজের ধরনের ওপর ভিত্তি করে এই সফটওয়্যার তৈরি করা হয়। এসব সফটওয়্যারকে সাধারণত প্রোগ্রামও বলা হয়।
বহুল ব্যবহৃত ব্যবহারিক সফটওয়্যার সমূহ হচ্ছে -
১) ওয়ার্ড প্রসেসিং প্যাকেজ প্রোগ্রাম : মাইক্রোসফট ওয়ার্ক, ওয়ার্ক পারফেক্ট, ওয়ার্ড স্টার ইত্যাদি।
২) স্প্রেডসীট অ্যানালাইসিস : মাইক্রোসফট এক্সেল, লোটার ইত্যাদি।
৩) ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম : মাইক্রোসফট এক্সিস, ফক্সপ্রো, ডিবেজ ইত্যাদি।
৪) ডেস্কটপ পাবলিশিং ইত্যাদি।
৫) মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট ইত্যাদি।
ফার্মওয়্যার ( firmware)
ফার্মওয়্যার হচ্ছে এক ধরনের সফটওয়্যার। কম্পিউটার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তাদের কম্পিউটার বা যন্ত্রাংশ সমূহ তৈরির সময় ফার্মওয়্যারকে রম (ROM)-এ স্থানীয়ভাবে সংরক্ষণ করে দেয়। কম্পিউটার ব্যবহারকারী ওয়ার্ক এর কোন রূপ পরিবর্তন বা সংশোধন করতে পারেনা। কম্পিউটার রান করলে সংক্রিয়ভাবে মনিটরে কিছু তথ্য দেখায় যাকে ফার্মওয়্যার বলে। ফার্মওয়্যার যে সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে তা হচ্ছে -
ক) প্রোগ্রাম রান করে।
খ) কম্পিউটার মেমোরিতে সংরক্ষণ তথ্যসমূহ প্রদর্শন করে।
গ) কম্পিউটারের বিভিন্ন কমান্ড, বিল্ট-ইন ডাটা লোড করে।
অপারেটিং সিস্টেম (operating system)
Operator থেকে operating শব্দের উৎপত্তি। অপারেটিং শব্দের অর্থ পরিচালনা। সিস্টেম শব্দের অর্থ পদ্ধতি। অপারেটিং সিস্টেম একটি সিস্টেম সফটওয়্যার। যে সফটওয়্যার কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশের মধ্যে সমন্বয়ক সাধন করে কম্পিউটারের সমর্থককে কাজে লাগিয়ে অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার গুলোকে পরিচালনা করে তাকে সিস্টেম বলে। অপারেটিং সিস্টেমের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ব্যবহারিক পরিচালনা করা এবং ব্যবহারিক বিভিন্ন সমস্যা অতি সহজে সমাধান করা। প্রতিটি সফটওয়্যার কে কিছু কাজ সম্পাদন করতে হয়। সুতরাং অপারেটিং সিস্টেম সকল নিয়ন্ত্রণ এবং সমন্বয়কারী ফাংশন দিয়ে তৈরি করা একটি সফটওয়্যার। নিম্নে কয়েকটি অপারেটিং সিস্টেমে উল্লেখ করা হলো -
> এম. এস. ডস ( MS DOS)
> পি. সি ডস ( PC DOS)
> এম. এস উইন্ডোজ (MS Windows)
> ইউনিক্স ( Unix)
> লিনাক্স (Linux)
> ম্যাক ও. এস ( Mac OS)
উল্লেখযোগ্য কিছু অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।
এম. এস. ডস ( MS DOS) —
DOS (Disk Operating System). ডগ একটি বর্ণ ঠিক অপারেটিং সিস্টেম। ৭০ এর দশকে মাইক্রোসফট কর্পোরেশনের তৈরি এম. এস. ডস ( MS DOS) এবং আইবিএম (IBM)কোম্পানির তৈরি পি.সি ডস ( PC DOS) ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম। ডস অপারেটিং সিস্টেমে কমান্ডো গুলো কিভাবে লিখে দিতে হয়। ব্যবহারের ক্ষেত্রে MS-DOS এবং PC-DOSএর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই, প্রকৃতপক্ষে এরা এক ও অভিন্ন।এ অপারেটিং সিস্টেমে কোন কম্পিউটার চালু থাকলে বুকিং শেষে C:\> আসে। C:\> চিহ্নকে C drive Root Directory বলা হয়।
ম্যাক ও. এস ( Mac OS) —
আসল কোম্পানি তৈরি মেকিনটোশ কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম। এজন্য একে ম্যাক ও.স ( MAC OS) বলা হয়। চিত্রভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে ম্যাক ও. এস প্রথম বাজারে আসে এবং জনপ্রিয়তা লাভ করে। এতে মাউস মেনু সহ সহজ গ্রাফিক্যাল বা চিত্র ভিত্তিক ইউজার আছে। প্রকাশনা শিল্পে ম্যাক ও.এস মেকিনটোশ কম্পিউটার বেশ জনপ্রিয়।
ইউনিক্স (Unix)—
সার্বাপেক্ষে পুরাতন অপারেটিং সিস্টেম হচ্ছে ইউনিক্স। ৭০ এর দশকের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের বেল ল্যাবরেটরিতে কিন টনসন ইউনিক্স অপারেটিং সিস্টেম সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেন। একটি বাণিজ্যিকভাবে প্রচার না করে শুধুমাত্র কয়েকটি নির্বাচিত বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জন্য পাঠানো হয় এবং উন্নয়নের জন্য। নেটওয়ার্কিং সিস্টেম ব্যবহারের শুরু থেকে ইউনিক্স একটি শক্তিশালী ও কার্যকর অপারেটিং সিস্টেম। টেলিকমিউনিশনের শিল্পে unix অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ইউনিক্স সিস্টেম সিস্টেম পার্সোনাল কম্পিউটার থেকে শুরু করে সুপার কম্পিউটার পর্যন্ত সব ধরনের কম্পিউটারে চলে। ইউনিক্স ব্যবহার করে একটি সিপিইউ এর সাথে একাধিক কিবোর্ড ও মনিটর সংযোগ করে অনেক ব্যবহারকারী কাজ করতে পারে।
লিনাক্স (Linux)
বিনামূল্যে পাওয়া একটি অপারেটিং সিস্টেম হচ্ছে লিনাক্স। ইউনিক্স চপারেটিং সিস্টেম নিয়ে কাজ করার সময় সুইডেনের যুবক লিনাস টারভোল্ডাস ১৯৯০ সালে ফিনল্যান্ডে হেলসিংকি বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চতর প্রশিক্ষণের সময় লিনাক্স অপারেটিং ভাবুন করেন যা ইন্টারনেটের সাহায্যে বিনামূল্য সরবরাহ করা যায়। উন্মুক্ত কোর্স কোড ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমের বিভিন্ন সংক্রান্ত বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। লিনাক্স বর্ণভিত্তিক বা চিত্র ভিত্তিক উভয় প্রকারে পাওয়া যাচ্ছে। বিনামূল্য বা নামমাত্র মরলে পাওয়া যায় বলে এর ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। লিনা সিস্টেম ব্যবহার করে সাধারণত পিসি দিয়ে সার্ভারের কাজ করা যায়। সম্প্রতি বাংলাদেশে লিনাক্স ব্যবহার পদ্ধতি উদ্বোধন হয়েছে।
উইন্ডোজ (windows) —
মাইক্রোসফট কর্পোরেশন উদ্ভাবিত উইন্ডোজ একটি চিত্র ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে অধীনে অনেকগুলো এলপ্লিকেশন থাকে, যা সে পরিচালনা করে। এসিস্ট্যান্ট ব্যবহার করে মাউস দিয়ে ওপর ক্লিক করে কাজ করা যায়, যার ওর অপারেটিং মানুষের নিকট অত্যন্ত প্রিয়। উইন্ডোস অপারেটিং সিস্টেমের অনেকগুলো ভার্সন বা সংক্রান্ত রয়েছে। window 95 এর আগে সিস্টেমগুলো ছিল ১৬ বিটের। উইন্ডোজ ৯৫, উইন্ডোজ ৯৮ উইন্ডোজ, উইন্ডোজ ২০০০ এর অপারেটিং সিস্টেমগুলো বিটের। windows 7 আর windows 10 এ সকল অপারেটিং সিস্টেমগুলো ৬৪বিটের।
কমেন্ট করুন;
comment url