OrdinaryITPostAd

ধৈর্য্য

 নাহ, "আর পারছি না"

"আমাকে দিয়ে কিছুই হবে না"

আমাদের সকলের জীবনে এমন একটি সময় আসে, যা আমরা কোন না কোন সময় এই কথাগুলোর সম্মুখীন হই। জীবনের উচু নিচু পথ পাড়ি দিতে গিয়ে ধৈর্য হারিয়ে ফেলি। প্রত্যেক সফল মানুষের জীবনের একটি অংশ জুড়ে রয়েছে ব্যর্থতা। কিন্তু তাদের সফলতা রহস্য হলো, প্রবল ধৈর্যের সাথে ইচ্ছা শক্তি। 

অনেকেই খুব অল্পতে হতাশ হয়ে পড়েন বা ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন। ধৈর্যের পরীক্ষা সাধারণত গন্ধ দরজার ভেতরেই ঘটে থাকে। ধৈর্য না থাকলে দীর্ঘমেয়াদি কোন কাজ সম্ভব নয়। 


আপনার ধৈর্য যদি কম থাকে তাহলে তা কয়েকটি উপায়ে ধীরে ধীরে অনুশীলনের মাধ্যমে বাড়াতে পারেন। 

পোস্টসূচীপত্রঃজেনে নিন উপায়গুলো :-

১। আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠুন :

নিজের ওপর বিশ্বাস রাখা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি শুধু ধৈর্য বাড়ায় তা নয়। সফলতা অর্জনে ও সাহায্য করে। 

নিজের উপর আস্তা হারিয়ে ফেললে মানুষ ধৈর্যহারা হয়ে পড়ে। মনে রাখতে হবে, "আমি পারবো "। যেকোনো কঠিন সময় নিজের উপর আস্থা রাখলেই, যে কোন সমস্যা সমাধান হবেই। 


২। নিয়মিত ডায়েরি লেখার অভ্যাস করুন : 

ডায়েরি লেখার অভ্যাস ধৈর্য শক্তি  ভিত্তি করে। যেমন - যেকোনো একটি দিনের একটি ঘটনা আপনাকে  খুব ভাবাচ্ছে বা অস্থির করে তুলছে। একান্তে বসে তা লিখে ফেলুন ডায়েরিতে। 

দেখবেন লেখার সাথে সাথে বেপারগুলো খুব পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে, আর ভাবতেও সাহায্য করছে। যে কোন ঘটনা বিস্তারিত লিখতে ধৈর্যের প্রয়োজন। তাই নিয়মিত ডায়েরি  লেখার অভ্যাস করবেন। 


৩। ধীরে ধীরে খাবার খান : 

প্রশ্ন আসতে পারে,  খাবারের সাথে মনের কি কোন সম্পর্ক আছে?  হ্যাঁ, অবশ্যই আছে। দ্রুত খেলে আপনার পরিপাক ক্রিয়া অস্বাভাবিক হয়ে সুস্থূলতার কারন হবে। বড় ব্যাপার, এতে আপনার  অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। তাই খাবার ধীরে খাওয়ার অভ্যাস করুন। 


৪। সঠিক খাদ্যা গড়ে তুলুন : 

সঠিক খাদ্যাভাস দেয় সুস্থ দেহ। শরীর ভালো থাকলেই আমাদের মনের অস্থিরতা কমে যাই। মন ফুরফুরে থাকে। 


৫। মেডিটেশন (ধ্যান) করুন :

মেডিটেশন বা ধ্যান ধৈর্য বাড়ানোর একটি অন্যতম কার্যকরি উপায়। যে কোন মানসিক চাপ থেকে মুক্তি লোভের উপায় হলো মেডিটেশন। ধৈর্যহীন মানুষের মধ্যে খুব অল্পতেই রেগে ওঠার প্রবণতা রক্ষা করা যায়। মেডিটেশন আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বাড়ায়, ফলে মানুষ সহজেই রেগে ওঠে না। ধ্যান শরীর মন দুই ই ভালো রাখে। তাই প্রতিদিন স্বল্প সময় মেডিটেশনের জন্য ব্যয় করা উচিত। মেডিটেশন শুধু ধৈর্য শক্তি বাড়ায় তা নয়, শরীরে একপ্রকার প্রশান্তির আগমন ঘটায়। প্রত্যেক মানুষের প্রতিদিন অন্তত ৫ থেকে ১০ মিনিট মেডিটেশন করা উচিত। 


৬। বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন :

বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। বই পড়া মানসিক চাপ কমায়। মনকে ধীর স্থির করে তোলে। ভালো বই কেবল ধৈর্য শক্তিই বাড়াই না, জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি ও পাল্টে দেয়। 


৭। বাস্তবআাদী হয়ে উঠুন : 

বাস্তবতা কঠিন আমরা সবাই জানি এবং তা মেনে নেওয়ার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে । নিজেকে বোঝাতে হবে,যা হওয়ার ছিল তাই হয়েছে । যা ভবিষ্যতে হওয়ার, তাই হবে। এই নিয়ে হা-হুডাশ করে লাভ নাই। তবে চেষ্টায় কোন ত্রুটি রাখা চলবে না। 


৮। নাকি কি চিন্তা করবেন না :

যেকোনো কাজে অগ্রসর  হওয়ার আগে চিন্তা করে নিতে হবে কাজের সুফল ও কুফল। ইংরেজিতে বলা হয় "Expert the Unexpected "। শুধুমাত্র লাভের কথা ভেবে অগ্রসর হলেই হবে না। মাথায় রাখতে হবে, কি কি লোকসান হতে পারে এবং সে সাথে রাখতে হবে তা থেকে উত্তোলনের  পরিকল্পনা। তাহলেই, হুট করে কোন সমস্যা সামনে এসে দাঁড়ালেও ধৈর্য হারাতে হবে না, পরিকল্পনা অনুযায়ী করা যাবে। 


৯। তুলনা করবেন না :

নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করা বন্ধু করতে হবে। অন্যরা কি করলো তাতে নজর না দিয়ে নিজের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। আমরা ছোটবেলা থেকেই প্রতিযোগিতা পূর্ণ মনোভাব নিয়ে বড় হই। তাই সব সময় সামনের জনকে টপকে যাওয়ার চিন্তায় অস্থির হয়ে থাকি। আমাদের সম্পূর্ণ ধ্যান জ্ঞান সামনের  জনকে হারানোর মাঝেই।  এই মন- মানসিকতা তৎক্ষণাৎ দূর করতে হবে। নিজের উন্নত করার চেষ্টা করতে হবে। হতে তা সময় বেশি লাগবে, কিন্তু ধৈর্যের এই পরীক্ষায় উত্তন্ন হতে পারলেই ধরা দিবে সফলতা। আর ধৈর্যের এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বদলাতে হবে মন-মানসিকতা। 


১০। নিজেকে সময় দিন :

মাঝে মাঝে নিজের সময় জরুরী। দৈনন্দিন কাজের ফাঁকে আমরা নিজেকে ভুলে যায়। ভুলে যায় আমাদেরও দরকার বিশ্রাম। তাই ছোট কোন ছুটি নিয়ে তোরে কোথাও ঘুরে আসতে পারেন। দেখে আসতে পারেন সমুদ্র, ঝড়না কিংবা পাহাড়। প্রকৃতির বিশালতা মনকে শান্ত করে। সাথে দিতে পারেন পরিবার, বন্ধু মহল বা দিতে পারেন ট্যুর। 


জীবনের ধৈর্যের গুরুত্ব কি.? 


মানব সভ্যতার ইতিহাস জুড়ে ধৈর্যের গুরুত্ব অসীম। জন্তু-জানোয়ারের ক্ষেত্রে অবকাশই তৈরি হয় না, কারণ তাদের মস্তিষ্ক কেবলই পরাবর্ত ক্রিয়া দ্বারা সচল। অর্থাৎ ইন্দ্রিয়ে সাহায্যে এর তথ্য বিশ্লেষণ করে অভ্যাস অনুযায়ী প্রত্যুত্তপর  ক্রিয়া করেন।অপরদিকে মানুষই একমাত্র প্রাণী, যারা বাইরে থেকে আগ্রত ইন্দ্রিয় লভ্য তথ্য কে নিজের মস্তিষ্কে বিশ্লেষণ করতে পারে, যার দ্বারা নিয়ন্ত্রণ  প্রাকৃতিক নিয়মাবলীকে সে নিজের এবং সভ্যতা রগ্রগতির ব্যবহার করতে পারে। এইভাবে মানুষ সভ্যতার সমস্ত কালজয়ী আবিষ্কার, যথা আগুন, কৃষি কাজ, চাকার আবিষ্কার ইত্যাদি সম্ভব হয়েছে। তাই মানুষের ধৈর্য যত দীর্ঘস্থায়ী হয়, তার সৃজনশীলতা এবং কর্মের খুব সুন্দরতর হয়, কারণ ধৈর্যের মাধ্যমেই জীবনের কে কঠিনতর সমস্যার কারণনে মানুষ সফল হয়। 

আজকের সময়ের দিকে যদি তাকায়, ধৈর্য কম হওয়ায় ও কারবে মেধাবী ছাত্র পড়াশোনা উৎকর্ষে অনেক সময় পৌঁছাতে পারে না এবং বড়দের ক্ষেত্রে অনেক সময় গঠনমূলক কাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। আমাদের পারিবারিক জীবন কেউ সুখী আর কন্ট্রোলহীন করে তোলার জন্য পরিবারের ধৈর্যশীল হওয়া প্রয়োজন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

কমেন্ট করুন;

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪